কালের খবর ডেস্ক :

মন্ত্রণালয়ের কাজকে আরও বেগবান ও গতিশীল করতে আগামী একশ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থা। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের (২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত) সকল দুর্নীতি, অনাচার, দমন-পীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থা গত এক মাসে যেসব ক্ষেত্রে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তার একটি তথ্য বিবরণী সাংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন উপদেষ্টা।

আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনার মধ্য রয়েছে- বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারকে দক্ষ ও জনবান্ধব করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ছাত্র জনতা এবং তাদের পরিবারবর্গকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা; স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা; গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা; সম্প্রচার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা; প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংশোধন অন্তে প্রণয়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য দপ্তর বা সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোর আইনি সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা; গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইন, বিধি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংস্কার করা; সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা; চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের ডিজিটালাইজেশনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা; অনলাইন নিউজ পোর্টালের লাইসেন্স প্রদান নীতিমালা যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের ৪টি শূন্য পদ পূরণ করা; চলমান প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে সম্পাদনে কিংবা প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা; বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) আয়বর্ধক কর্মসূচির জন্য বিজনেস সল্যুশন প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন, ১৯৫৭-কে যুগোপযোগী করা; বাংলাদেশ বেতার থেকে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পথে শীর্ষক, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ ছাত্র-জনতাকে নিয়ে এপিসোড প্রচার করা; বাংলাদেশ বেতারের অনিয়মিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বা আহত ছাত্র-জনতার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, সংগঠিত হওয়া এবং সমন্বয়কদের মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার বিবরণের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা; ঢাকাসহ সারাদেশে দেয়াল লিখন, স্লোগান এবং গ্রাফিতি তুলে ধরে তথ্য বিবরণীমূলক অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা; ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত ছাত্রদের পরিবারকে নিয়ে ২০০টি ফিচার প্রকাশসহ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যুগোপযোগী করা হবে। তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা; পতিত সরকারের ২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত সকল দুর্নীতি, অনাচার, দমন-পীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করা; ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সকল শহীদের ওপর পরিচিতি ভিত্তিক ডকুমেন্টারি নির্মাণ এবং দেয়ালে অংকিত গ্রাফিতির ওপর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক অ্যালবাম তৈরি করা; বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং রাষ্ট্র সংস্কার ভিত্তিক ফিচার প্রকাশ করা; বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমসহ অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকা ভিত্তিক সেমিনার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজন করা; বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃক সেন্সর্ড অবস্থায় থাকা চলচ্চিত্রসমূহ নীতিমালা ও যৌক্তিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা; চলচ্চিত্র বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি পুনর্গঠন করা; প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আইন ২০১৮-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ -এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা; তথ্য কমিশনের বিদ্যমান চাকরির বিধিমালা যুগোপযোগী করা। এছাড়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থা থেকে নিয়মিত দাপ্তরিক কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে অব্যাহত রয়েছে এবং অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।